পর্ব-২
পতিতার প্রেম
লেখক: রবিউল ইসলাম জিবলু
মেয়ে সমস্যা নাই।তবে আমি বলতে পারবো না। আপনি কাজ করতে এসেছেন কাজ করবেন। আমার ব্যাপারে কিছু জানা লাগবে না। আর একটা কথা আমরা পতিতা। আর এটাই পরিচয়।
সজিব: দেখ এভাবে বলবে না। আমি জানি তুমি নিজের ইচ্ছায় এ পথে আসোনি। তবে তোমার ব্যাপারে জানা টা খুব দরকার।
মেয়ে: আপনি বেরিয়ে যান তো। আপনার সাথে কথা বলে সময় নষ্ট করতে চাই না।
সজিব সেখান থেকে আবার বাসায় চলে আসলো। সজিবের মাথায় শুধু সেই পতিতার মেয়ের কথা ঘুরতে লাগে। এত সুন্দর একটা মেয়ে এই পথে কিভাবে আসলো। তার পরিবার কোথায়। তার বাড়ি কোথায়। এসব কথা যত ভাবে সজিবের ততোই সেই পতিতা মেয়েটির ব্যাপারে জানার আগ্রহ বারে।
এভাবে আরো কিছুদিন কেটে গেলো। সজিব আবারো সেই পতিতা পল্লী তে গেলো, আর সেই মেয়েটি কাছে সে আবাও!
মেয়ে: কি ব্যাপার আজ ও, আপনি এখানে কাজ করতে আসেন না। তাহলে এক সপ্তাহ পর পর এখানে আসেন কেন।
সজিব: সত্যি বলতে তোমার কথা যতই ভাবি ততই তোমার ব্যাপারে জানার আগ্রহ টা বেশি জাঁগে এ জন্য ই আসি। যত দিন না তোমার ব্যাপারে কিছু বললবা আমি আসতেই থাকবো।
মেয়ে: বুঝেছি, আপনি আমার ব্যাপারে না জানা পর্যন্ত এখানে আসা ছাড়বেন না।
সজিব: হ্যাঁ!
মেয়ে: আচ্ছা ভেতরে আসেন।
সজিব:মেয়েটির সাথে ভেতরে চলে গেলো।
মেয়ে: আচ্ছা বলেন তো কি জানতে চান আমার ব্যাপারে।
সজিব: তোমার এখানে আসার গল্পটা। তুমি কিভাবে আসলে এখানে।
মেয়ে: তাহলে শুনেন!
সজিব: হ্যাঁ বলেন!
মেয়ে: আমার বাড়ি টাঙ্গাইল। বাবা,মা, ছোট ভাই আর আমি এ নিয়ে আমাদের পরিবার। আমাদের সংসার ছিল খুব অভাবের। তাই বেশি পড়াশোনাও করতে পারিনি। ক্লাস এইট পর্যন্ত পড়াশোনা করছি। ক্লাস নাইনে উঠার ভাগ্য হয়নি। এমন সময় বাবা রোড এক্সিডেন্টে মারা যান। তার পর থেকে আমাদের সংসারে অভাব বৃদ্ধি পায়। মা অন্যের বাড়িতে কাজ করে যা আনতো তা দিয়ে দুবেলা ঠিক মতো খেতে পারতাম না।
হঠাৎ ঢাকা থেকে আমার এক পাড়া পরশি খালা আমাদের বাড়িতে যায়। তার পর মা কে বলে তোমাদের তো খুব অভাবের সংস্যার। তোমার মেয়ে কে আমার সাথে ঢাকা তে নিয়ে যাই। আমার সাথে কাজ করবে, কাজের পাশাপাশি পড়াশোনাও করতে পারবে। আমার মালিক টা অনেক ভালো। আর মাসে তোমাদের কে টাকা পাঠাবে। তখন তোমাদের অভাব থাকবে না।
মা আমাকে যেতে দিতে চাই ছিলো না। মা তাকে বলে ছিলো কষ্ট করে হলে থাকবো,তবুও ওকে ঢাকা যেতে দিবো না। তখন খালা আমাকে বললো দেখ মা তোর মা কে বোঝা। আর হ্যা মাস দুই পর পর বাড়িতেও আসতে পারবি তোর মা আর ছোট ভাই কে দেখার জন্য। তুই অনন্ত না করিস না মা। তার মন ভোলানো কথাই আমি আমার মা কে রাজি করিয়ে সেই দিন তার সাথে ঢাকা তে আসি। তার পর দুই দিন থাকার পর তাকে বললাম খালা আমার কাজ কি। তুমি কোন কাজেও নিয়ে যাও না।
খালা: আর দুই দিন পর আমার মালিক আসবে। মালিক জরুরি জন্য ঢাকার বাহিরে গেছে। মালিক আসলেই তোকে নিয়ে যাবো।
দুই দিন একটা গাড়ি করে অল্প বয়সী দুইটা মেয়ে ও একটা বয়স্ক মহিলা আসে। তার খালা কে বলে আমাকে নিয়ে যায় তাদের সাথে।
তারা তিন আমায় ভালো ভাবে রাখলো। চার দিনের মাথায় আমায় একটা রুমে ঢুকিয়ে দিয়ে বললো। সাহেব যা বলবে তাই করবি। তো আমি রুমে ঢুকতেই একটা মধ্যবয়সী পুরুষ মানুষকে খাটে বসা দেখতে পায়। আমাকে দেখেই সে আমার এগিয়ে আসে। আমার গায়ে হাতে দিতে শুরু করে,বাজে বাজে কথা বলা শুরু করে। আমি বাহিরে আসতে চাইলে আমাকে ঝাপটে ধরে খাটে ফেলে আমার সব কিছু হিংস্র বাঘের মতো ছিড়ে ছিড়ে খেতে লাগলো। আমি খুব জোরে জোরে চিৎকার করতে থাকি। কিন্তু চিৎকার করে কোন লাভ হয়নি।
এর পর সে দিন প্রায় ১০ জন পুরুষ আমার শরীর ছিড়ে ছিড়ে খাওয়ার মতো করে ছিলো।
পরে দিন জানতে যে খালা আমাকে চাকরির জন্য নিয়ে এসেছে, সেই এই পতিতার সরদারনীর সাথে কাজ করে আর গ্রাম থেকে সহজ সরল মেয়েদের কে কাজের লোভ দেখিয়ে এখানে বিক্রি করে দেই। পালানোর অনেক চেষ্টা করেছি কিন্ত পারিনি। তার পর থেকে আমার ঠিকানা হয় পতিতালয়ে।
মেয়েটি চোখে জল ঝরতাছে দেখলাম।
আমি: আচ্ছা এখন ইচ্ছে করে না এখান থেকে বেরিয়ে যেতে, নতুন করে জীবন শুরু করতে।
মেয়ে: এখন ইচ্ছে করে না। আর ইচ্ছে করলেও কি নতুন করে জীবন শুরু করতে পারবো না। কেন না আমাদের জীবনটা যে পতিতালয়ে।
চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
ভুলত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেব। ভালো লাগলে লাইক কমেন্ট ও শেয়ার করবেন!