কালের পাতা
শুভ্রজিৎ মণ্ডল
আমি একাকী নিঃসঙ্গ জীব অপরিচিত
নদীর পাড়ে বসে।
জীবনের সকল বঞ্চিত সুখ নির্জন রাতে
নিভৃতে গুনতে এসে।
মেলেনা হিসেব, খুঁজে পাইনা অর্ধেক পাতা
আছে যতটুকু বাকি সবেতেই বিষাদ ভরা।
হঠাৎ দেখি মেঠোপথ ধরে নব বধূবেশে
ধেয়ে আসে এক মায়াবিনী অপসরা।
উদিগ্ন মুখখানি তার, রূপের ঝলকে
প্রভাতি আলোর বাহার।
লজ্জায় মুখ ঢাকে দ্বাদশীর চাঁদ,
বুকে নিয়ে যত আপন কলঙ্ক ভার!
অস্পষ্ট দেখেছি তাকিয়ে এক তীব্র বিমুগ্ধ মাদকতায়, অবিশ্বাস্য সেই রূপের দীপ্তি।
বুঝেছি তখন আমার জীবন খাতায়–
এই রাতের অনুভূতি, সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।
আজও ভাবলে বিষণ্ণতায় ভিজে যায়
কাপুরষ চোখের শুষ্ক দুটি পাতা,
মুক্তি পায় কিছু নিষ্ফল অশ্রুজল!
বস্তাবন্দী করে সেই অপরূপ সৌন্দর্য্যের
এক একটি টুকরো জলে ডুবিয়ে ছিল,
কালান্তরের নিষ্ঠুর পৌশাচিক দল!
আধো-অন্ধকার রাতে দুঃস্বপ্নের
ছোঁয়াচে হাওয়ায়, ঘুমন্ত আকাশের তলে–
নীরব কান্নায় ঘটেছে সেই লাঞ্ছিত পাপ
নির্দয় সত্যি হয়ে শতাব্দী প্রাচীনকালে!
সেই পাশবিক ব্যভিচার একাকী নিঃসঙ্গতায়
কখনো কখনো জীবন্ত হয়ে ফোটে!
এখনো দিগভ্রান্ত পথিক বেখেয়ালে–
লুপ্ত স্মৃতিকে, সত্যি ভেবে বিষ্ময়ে কেঁদে ওঠে!
নদীর জলে থমথমে নীরবতা,
বুকের গোপন ক্ষত উঁকি মারে চাপা আর্তনাদে।
কালের কতো রক্তাক্ত স্মৃতি জীবাশ্ম হয়
স্রোতের চলমান গতিপথে।
ভবিষ্যৎ জানে এমন কতো অজানা পাপ
শুধু বালি হয়ে পড়ে রবে!
কেউ কি খুলবে কালের সেই আঁধার পাতা,
কেন বৃথা প্রলাপ তবে!
🌾🌾🌾 সমাপ্তি 🌾🌾🌾
রচনা কাল :- ১৫/১২/২০২০
ভাণ্ডারখালী, হিঙ্গলগঞ্জ, ৭৪৩৪৩৯
অসাধারণ