দৈনিক কবিতার প্রতিযোগিতা
কবিতা — মুখোশ
কলমে :– অয়ন বিশ্বাস।
তারিখ :- ২৮/০২/২০২১
সমুদ্র বক্ষ চিরে উথাল পাথাল গম্ভীর গর্জনে সাইক্লোন ধেয়ে আসে।
কিম্বা সবারি অজান্তে হিরোশিমা-নাগাসাকি
যেমন মৃত্যুর তান্ডবে নেচেছিল…
তেমনি এই শান্ত হিম ঘরের মত
আমার শরীরে,
আপাদমস্তক উদভ্রান্ত শিহরণ খেলে যায়।
সব লণ্ড ভন্ড হয়ে যায় আমার চিন্তা চেতনা,
মানুষের হিতকর কামনা,বন্ধুর জন্য আত্মত্যাগ।
এসবই অজানা অলৌকিক শক্তির আঘাতে
ঠুনকো হতে থাকে, ঘুন ধরে শান্তিকামী চেতনায়।
আমি উন্মাদের উপরে চড়ে বসি!
যখন শতশত আলোকবর্ষ দূরের
ভিনগ্রহী প্রাণীর মত,
ধূর্ত নেকড়েদের কথার আঁচড়ে,
মানসিক ভাবে বিধস্ত হতে থাকি।
যখন আমার ধৈর্যের বাঁধ শিথিল,
তখনও পৃথিবীর মুখোশ ধারী নেকড়ে গুলো ,
মিষ্টি কথার বান পরকে পরকে ছুড়তে থাকে।
উদভ্রান্ত জির্ণ শীর্ণ অভিমানী মন নিয়ে
ভীষ্মের মত ধাত্রী চরণে লুটিয়ে পড়ি।
জরায়ু ছেঁড়া যন্ত্রণার মত সমস্ত শরীর
ছট ফট করতে থাকে,
আর খুঁজতে থাকে মুখোশহীন একটি মুখ।
বিশ্বাসঘাতকতা ও ব্যাঙ্গাত্মক কটূক্তির বান–
শরীরের তাজা মাংস ছিড়েখুঁড়ে
যখন হৃদয় সুধা কে তিক্ত করে,
তখন আত্মীয়তা, সকল বন্ধুত্বের মিষ্টিমুখ
বিছুটি পাতার মতো মনে হয়।
চারিদিকে গ্যালন গ্যালন চাপা ঝাঁঝালো রৌদ্র,
চোখ ঝলসে যায়!
প্রাণ জুড়ানোর জন্য একটুকরো শান্তির
পিছনে নিরন্তর ছুটে চলেছি,
মুখোশ দেখতে দেখতে।
নিজের চোখ কেও বিশ্বাস করতে পারিনা ।
চারিদিকে রং, বে রং-এর মুখোশে ঢাকা মুখ!
আমি দিশে হারা হয়ে যাই ,মুখোশ গুনতে গুনতে!
নিজেকে ধিক্কার দিতে দিতে ক্লান্ত ,
অবসন্ন পালক ওঠা রুগ্ন মোরগের মত হয়ে পড়ি।
দু-চোখ ফেটে জল বেরিয়ে আসে ,
আসল মুখ এর প্রত্যাশায়।
শুধু একটিমাত্র আসল মুখ দেখতে চাই ,
আসল মুখ দেখার বড়ো সাধ জাগে।
মনে হয় সব মুখোশ গুলি
লন্ড ভন্ড করে দেই!
ভিমের গদার প্রচণ্ড ধাক্কায় —
আর তখনি আদর্শের হাতুড়ি ধীরে ধীরে
ঠোক্কর দিতে থাকে।
আমার উদ্বিগ্নতা কে ঘিরে ফেলে অলৌকিক
প্রেম ও মায়ায়।
আমি শান্তি খুঁজে পাই পরম আশ্রয় স্থলে।
দুঃস্বপ্নে মত সমস্ত অপমান ভুলে গিয়ে ,
পরম পিতার কাছে তাদেরই মঙ্গল কামনায় নিজেকে শান্ত করি।
🌸🌸 সমাপ্ত 🌸🌸