হাসতে চাইলে সবাইকে পড়ার অনুরোধ করা হলো😁
আমি মেঘ। বিকেল বেলা মামাতো ভাইয়ের সাথে রিকশায় করে ঘুরছিলাম।
হঠাৎই আমার মামাতো ভাই পাশ থেকে চিৎকার করে বলে ওঠলো,
—আপু, ওই দেখ, এই গাড়ি ভর্তি যুক্তির লাঠি আছে!
—কি সব বলতেছিস? যুক্তির আবার লাঠি হয়? ওই গাড়িতে যে যুক্তির লাঠি কে বললো তোকে? (ধমকের সুরে)
—তুই দেখতে পাচ্ছিস না গাড়ির গায়ে হলুদ রং দিয়ে লেখা “লজিস্টিক “?
—হ্যাঁ, দেখতে পাচ্ছি, তো?
ঘরে বসে বই কিনুন অনলাইনে http://www.boibiponibd.com
—তুই আসলেই একটা গাধা আপু! আমি স্কুলে পড়েছি, লজিক অর্থ যুক্তি, আর স্টিক অর্থ লাঠি,
তাহলে লজিস্টিক অর্থ যুক্তির লাঠি না? তার মানে তো ওই গাড়িতে যুক্তির লাঠিই আছে!
সাত বছরের মামাতো ভাইয়ের মুখে এই যুক্তি শোনে মনে মনে গালি দিয়ে ওর চৌদ্দ গোষ্ঠী কে আমি মুক্তি দিয়ে দিলাম!
মেজাজ টা এমনিতেই খারাপ ছিলো, রাতের বেলা অনেক ক্ষুধা লাগা সত্ত্বেও না খেয়েই শুয়ে পড়লাম।
চোখ দুটি সবেমাত্র লেগে এসেছিলো, এমন সময় কোনো একটা আওয়াজে ঘুম ভেঙে গেলো। অনেকক্ষণ গবেষণার পরে আবিষ্কার করতে পারলাম ওটা আসলে আমার ফেসবুকের নোটিফিকেশনের সাউন্ড।
মোবাইল টা হাতে নিলাম, নোটিফিকেশনে লেখা
কাব্য চৌধুরী wants to be your friend.
ওমাগো! এটা কেমনে সম্ভব? আমাকে এতো সুন্দর,হ্যান্ডসাম একটা ছেলে ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট দিছে? আরেহ বাহ! নামটাও কতো সুন্দর! কাব্য 🤗🤗
আমাকে আবার জীবনেও কোনো ছেলে ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট দেয় নাই, তাই কোনো কিছু না ভেবে ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট একসেপ্ট করে ফেললাম।
সাথে সাথেই দেখি ইনবক্সে ম্যাসেজ।
” আমি কাব্য, তুমি মেঘ,
তোমাকে ঘিরে আমার সব আবেগ।
ভালো লাগে তোমার ওই মুচকি হাসি,
কি করে বুঝাবো কতো টা ভালোবাসি!”
রীতিমতো কবিতায় ক্রাশ খেয়ে গেলাম! ততক্ষণে আমার পার্লসপিটিশন শুরু হয়ে গেছে! কারণ এ পর্যন্ত জীবনে কোনোদিন কোনো প্রপোজ না পাওয়া নিষ্পাপ মানুষ আমি। তাই দ্বিতীয়বার না ভেবে প্রপোজ একসেপ্ট করে ফেললাম।
“যাক, এবার অন্তত একটা বয়ফ্রেন্ড হলো। রাতের বেলা পেটভরে খেয়ে বলবো, বাবু, তুমি না খেলে আমিও খাবো না।😁😁 ভাবতেই ভাল্লাগতাছে।”
নিয়মিত কথা হয় কাব্যের সাথে,দেখাও হয় প্রতিদিন। ফুচকা,আইসক্রিম, ঝালমুড়ি,চটপটি, এগুলো রেগুলার খাওয়া! আমাকে প্রতিদিন শপিং করায়, মেকআপ থেকে শুরু করে জুতা! উফফ! বলাই তো হয়নি, সে তার একটা কিডনী বিক্রি করে আমাকে আইফোনও কিনে দিছে! ও মাগো! টুরু লাব🤣
রোজ বিকেলের মতো সেদিনও দুজনে একসাথে বাসায় ফিরছিলাম। হঠাৎই আমার মাথা টা ঘুরে গেলো। তারপর কি হলো ঠিক জানিনা।
যখন জ্ঞান ফিরলো, নিজেকে আবিষ্কার করলাম হাসপাতালের বেডে!
“আল্লাহ! আমি তো গাড়িতে ছিলাম! কাব্যের সাথে। কিন্তু হাসপাতালে এলাম কি করে? এক্সিডেন্ট করলাম নাকি? কাব্য কোথায়? ”
আমার অস্থিরতা দেখে ডাক্তার বললো,
— অল্পের জন্যে বেঁচে গেছেন! নারী পাচারকারীদের হাতে পড়েছিলেন, ভাগ্যিস ঠিক সময়মতো পুলিশ গিয়ে আপনাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে! আপনার ওই প্রেমিক পুরুষ কাব্য একজন নারী পাচারকারী!
—না, এ হতে পারে না! আমি বিশ্বাস করি না! আমার কাব্য নারী পাচারকারী হতে পারে না! নাাাা,,,,,
“আজব তো! নিজের চিৎকার টা নিজের কাছেই বিদঘুটে মনে হলো! আর আমার কোমড় ব্যাথা করতেছে কেন? আমি না খাটের ওপর শুয়ে ছিলাম? ফ্লোরে আসলাম কি করে? আর কোথায় কাব্য? কোথায় আমার মোবাইল? আমার আইফোন আর মেকআপ বক্স কই? হাসপাতাল আর ডাক্তারই বা কই?
আমি তার মানে এতক্ষণ স্বপ্নে দেখছিলাম?”
সারাদিন খুঁজেও ফেসবুকে কাব্য চৌধুরী নামে কাউকে খুঁজে পেলাম না! আমার আর এ জীবনে প্রেম করা হবে না!
শেষমেশ এতো বড় ছ্যাঁকা খাইলাম, তাও আবার স্বপ্নে!! এটা কি মানা যায়??
টুরু ছ্যাঁকা 🙄🙄🙄
(গল্প টা সম্পূর্ণ কাল্পনিক। গঠনমূলক মন্তব্য আশা করছি। ধন্যবাদ) 😊😊